মানুষের মুক্তি নেই এইটা আমার বিশ্বাস_কচি রেজা
মানুষের মুক্তি নেই, এইটা আমার বিশ্বাস
কচি রেজা
কচি রেজা কবি। আমুগ্ধ কবি। কবিতার যার প্রাণ। তার কবিতার
প্রাণ চিত্রকল্প। চিত্রের পর চিত্র সাজিয়ে কবিতা শরীর নির্মাণ করেন। পারিবারিকভাবেই
কবিতার সাথে প্রেম। দূরদেশে থাকলেও প্রাণ পড়ে থাকে তার বাংলাদেশে। বাংলাদেশের
কাদামাটি নিয়ে খেলতেই ভালোবাসেন। আর ভালোবাসে এই দেশের শিশুদের। যাদের নিয়ে স্বপ্ন
দেখেন। বাংলাদেশ হবে শিশুদের জন্য স্থান।
এই কবির সাথে আমার পরিচয় ফেসবুকে। কবির কবিতা পড়ে আমি মুগ্ধ
হই। আর একটি সাক্ষাৎকার নেয়ার বাসনা করি। সেই চিন্তার থেকেই কথোপকথন হয় তাঁর সাথে।
সাহিত্য, জীবন, রাজনীতি, সমাজনীতি সকল বিষয় ওঠে এসেছে এই কথোপকথনে।
আফসার নিজাম : কেমন আছেন আপা।
কচি রেজা : ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন।
আফসার নিজাম : আমিও ভালো আছি। আমি আপনার একটি স্বাক্ষাৎকার নিতে চাই।
কচি রেজা : বেশ তো কিন্তু কীভাবে?
আফসার নিজাম : এই
যে আমি কথা বলবো আপনার সাথে। এইভাবে লাইভ হতে পারে।
কচি রেজা : তা হতে পারে।
আফসার নিজাম : আমরা
আলাপচারিতা করবো। এটাই হবে আমাদের সাক্ষাৎকার। আমরা জীবন সম্পর্কে জানবো, সাহিত্য, সমাজ, সকল বিষয়েই টাচ করবো।
কচি রেজা : ঠিক আছে শুরু করা যায়। কিছু প্রশ্ন তৈরি করে
দেন।
আফসার নিজাম : আমি
চাচ্ছিলাম লাইভ প্রশ্ন যা মনে আসে। সেইভাবে আমাদের
আলাপচারিতা এগোবে।
কচি রেজা : ঠিক আছে।
আফসার নিজাম : কবে
থেকে লেখালেখির জগতে প্রবেশ কলেন?
কচি রেজা : আসলে
এইটা তেমন ঘটনা নয় কারণ বাসায় লেখার পরিবেশ তৈরি হয়েই ছিলো।
আফসার নিজাম : যেমন
কচি রেজা : বাবা চাচারা নাটক করতেন। অভিনয় করতেন। বাবা নিজেও লিখতেন, আবৃত্তি, অভিনয়,
পত্রিকা সম্পাদনা এসবের ভিতর কিছু না
হওয়াটাই আশ্চর্যের ছিলো।
আফসার নিজাম : আমরা
কি আপনার পরিবারের সাথে একুট পরিচিত হতে পারি?
কচি রেজা : বাবা আসলে কোলকাতায় ছিলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নতুন বউ মানে আমার মাকে নিয়ে ওখানেই ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত থাকতে পারেন নি। বোমা হামলায় সেখানেও থাকার পরিবেশ ছিলো না। তারপর রায়ট এইসব কারণে চলে এসেছিলেন।
আফসার নিজাম : আপনারা
কি ভারত বাংলার অধিবাসী। নাকি বাংলাদেশের। আপনাদের অভিভাক সেখানে কি চাকুরী করতেন?
কচি রেজা : না না। আমাদের বাড়ি গোপালগঞ্জে। বাবা গেছিলেন চাকরি করতে।
আফসার নিজাম : আপনারা
ক'ভাইবোন। তারা কে কি করছেন?
কচি রেজা : আমি
সবার চেয়ে অধম। থাক না ভাইবোন আজ।
আফসার নিজাম : আপনার
লেখা কখন কোথায় প্রথম প্রকাশ পায়?
কচি রেজা : সেতো
মনেও নেই। সিরিয়াস
ভাবে তো লিখবো,
ভাবি নি।
আফসার নিজাম : আজ
তো আপনি লেখক। সেখানে সিরিয়াস না, সিরিয়াস না এরকম কি কিছু আছে?
কচি রেজা : এখন
সিরিয়াস শুধু না, হয়তো যতোদিন মন মতো লেখা হবে (নিজের ও একটা বিচার আছে তো) ততোদিন লিখবো।
আফসার নিজাম : কি
লিখতে ভালো লাগে। মানে কবিতা, গল্প, উপন্যাস, শিশুসাহিত্য।
কচি রেজা : আসলে এখন বুঝেছি,
কবিতা ছাড়া আর কিছু হবে না। গল্পও লিখেছি। ২টা বই আছে।
কিন্তু আমি নিজে খুব খুঁত খুঁতে। তাই মনে করি, গল্প হবে না। অন্ততঃ এখন আমি কবিতার জোয়ারে আছি।
আফসার নিজাম : কি হতে চেয়েছিলেন?
কচি রেজা : আসলে
কিছু হতে চাই নি। কিন্তু
দেখলাম, কবিতা লিখতে শুরু করেছি
আফসার নিজাম : কবিতা
আপনার কাছে এসে ধরা দিয়েছে। কবিতা আপনাকে ভাসায়। তা বেশ বুঝি। প্রতিনিয়ত কবিতার খেয়ালে থাকেন। কিন্তু বই দুটির নাম কি। কখন প্রকাশ হয়?
কচি রেজা : একটা
২০০৪ এ নাম 'অগ্নি
সোয়ারী'। প্রকাশক,
দীপ্তি। আরেকটা সম্ভবতঃ ২০০৮ নাম 'যে লতার নীলকণ্ঠ নাম' প্রকাশক অঙ্গণ প্রকাশ।
আফসার নিজাম : আপনার
কবিতার বইয়ের সফলতা কামনা করি। বাংলা সাহিত্য নিয়ে কি ভাবছেন, বর্তমান সময়ের সাহিত্য নিয়ে
কচি রেজা : ভাবি
না তো, আমি শুধু লিখি।
আফসার নিজাম : বর্তমানের
কবিতা কেমন, আগামীর সাহিত্য কেমন হবে?
কচি রেজা : সাহিত্য
সব সময়েই সমকালীন আর তা যদি তুলে ধরা যায় সঠিকভাবে, সেটা হতে পারে চিরকালীন। বর্তমানকে সব সময়েই বিচার করা যায় না।
আফসার নিজাম : বর্তমানে
ছন্দ নিয়ে অনেকই ভাবে না। কেউ কেউ তো বলে ছন্দ ছাড়া কবিতা টিকবে না। এসব বিষয়ের সাথে আপনার
মতামত কি?
কচি রেজা : সে
সম্বন্ধে বলতে গেলে বলতে হয়,
সবই যুগের দায় পালন করছেন। আগামীতে মূল্যায়ন হবে। ছন্দ ছাড়া কী কিছু হয়?
আফসার নিজাম : জীবন
তো ছন্দময়। আপনার জীবন দর্শন সম্পর্কে আমরা কি কিছু জানতে পারি?
কচি রেজা : জীবন
যেমনই হোক, যাপন হোক নিজের মতো।
আফসার নিজাম : এই
নিজের মতোটা কি। আমরা আপনাকে জানতে চাই। আপনার নিজকে জানতে চাই
কচি রেজা : সেটাই
দ্বন্ধ। আসলে
কী আমরা পারি, নিজের মতো যাপন করতে?
পারি না। আকাঙ্ক্ষা রয়ে যায় ...
আফসার নিজাম : একজন
কবির আকাঙ্খা কি। কি তার চাওয়া। কি তার পাওয়া। তা জানার কিউরিসিটি থাকে
পাঠকে।
কচি রেজা : কবি তো স্বপন দেখে দেখে জীবনের
ঘাটতি পূরণ করেন।
আফসার নিজাম : জীবন
সম্পর্কে আপনার মূল্যান কি
কচি রেজা : সমস্ত
বিশ্বের কথা ভাবি। সবাই খেয়ে পরে বাঁচুক। বিশেষ করে শিশুরা যেনো ক্ষুধায় কষ্ট না পায়।
আফসার নিজাম : শিশুদের
জন্য ভাবেন। সুযোগ আসলে আপনি শিশুদের জন্য কি করবেন?
কচি রেজা : আমি
ভাবি কী জানেন? স্কুলে শিশুদের দুধ খাওয়ান যেতো যদি রোজ এক গ্লাস করে। আমি সব কিছু করতে চাই
শিশুদের জন্যে।
আফসার নিজাম : ধন্যবাদ
শিশুপ্রেমিক
কচি রেজা : হা হা
হা হা
আফসার নিজাম : আমরা
আবার আসি সাহিত্য বিষয়ক প্রশ্নমালায়।
কচি রেজা : বলুন
আফসার নিজাম : সাহিত্য
করতে এসে কোন কোন সাহিত্যিক আপনার সাহিত্য জীবনে প্রভাব বিস্তার করেছে। মানে আপনি কাদের দ্বারা
অনুপ্রাণিত।
কচি রেজা : প্রথমে
আমার বাবা এবং দ্বিতীয় তো আমার বাবা।
আফসার নিজাম : সাহিত্যিকদের
মধ্যে কে কে?
কচি রেজা : আমার লেখায়
কারোর
প্রভাব পড়েছে কী না। তাহলে সেটা আমি বলতে পারবো না। আমি পড়েছি অনেককে কিন্তু লিখতে চাই নিজের
মতো।
আফসার নিজাম : নিজের
মতোই করেই তো সবাই গঠন হয়। আপনি আপনার মতোই। এটাই আমরা উপলব্ধি করি।
কচি রেজা : তারপর
ও সমালোচক অথবা পাঠক বলবেন প্রভাবের কথা।
আফসার নিজাম : মৃত্যু
সম্পর্কে আপনার ভাবনা কি?
কচি রেজা : মৃত্যু? উরিব্বাপ,
আমি মরতে চাই না।
আকাশ কে দেখবে? গাছ? মানুষ?
আমার দেশ?
আমি
যে আমেরিকা থেকে চলে আসি, আমার দেশ দুচোখ ভরে
দেখব বলে।
আফসার নিজাম : মরিতে
চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে কিন্তু তবুও চলে যেতে হয় না ফেরার দেশে। তাই সব কবি সাহিত্যিকদের
মৃত্যুচিন্তা কাজ করে। আপনার কি সেরকম কিছু হয়
কচি রেজা : জানি
তো। যেতে
হবেই।
আফসার নিজাম : যাক
একটু আগেই বলেছিলেন 'আমার দেশ দুচোখ ভরে দেখব বলে' দেশ নিয়ে কি ভাবেন?
কচি রেজা : কিন্তু
জানেন, জীবন আর মৃত্যু একজন সৃজনশীল মানুষই ভাবে সব চেয়ে বেশি
আফসার নিজাম : হা
তা ঠিক। সে ভাবে বলেই তো মৃত্যু এতো সুন্দর। দেশপ্রেমিক নাগরিক
হিসেবে দেশের জন্য কোন কাজগুলো জরুরি, করনিয় বলে আপনি মনে করেন।
কচি রেজা : দেশকে
ভালোবাসা কোনো শর্ত ছাড়া
আফসার নিজাম : সুধু
কি ভালোবাসা দিলেই চলবে। তবে কি সেই প্রবাদ মিথ্যে। অভাব যখন দরজা দিয়ে প্রবেশ করে
ভালোবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায়।
কচি রেজা : প্রথমতঃ
ভালোবাসা তারপর যা করতে হবে সেটা করতে গেলে রাজনীতি করতে হয়
আফসার নিজাম : রাজনীতি
কি জীবন থেকে আলাদা?
কচি রেজা : না
আলাদা না।
আফসার নিজাম : নাকি
রাজনীতিকে সাহিত্য বিশ্বাস করে না! সাহিত্যকে আমরা কিভাবে রাজনীতিয়ায়ন করতে পারি
কচি রেজা : সে তো
আমরা বিশ্ব সাহিত্যে অনেককে এভাবে পেয়েছি। কিন্তু আমি মনে করি দেশপ্রেম
ছাড়া কবিতা লেখা যায় না। রাজনীতিও করা যায় না।
আফসার নিজাম : ধন্যবাদ
আপনাকে আপনি সাহিত্য থেকে রাজনীতিকে বাদ দেননি। রাজনীতি ছাড়া তো জীবন বোঝা যায় না
কচি রেজা : ক্যান
বাদ দেবো? দেশ মানে কবিতা। আর দেশ মানে রাজনীতি। একটা স্বাধীন দেশের আকাশ
সেতো সেরা কবিতা। সেই দেশকে ক্ষুধামুক্ত করা এবং গড়ে তোলা তো আরো বেশি কবিতার
মতো।
আফসার নিজাম : এই
লাইনটিই তো কবিতা হয়ে গেছে।
কচি রেজা : ধন্যবাদ।
আফসার নিজাম : আপনার
স্মরণীয় কিছু বলেন।
কচি রেজা : আমার
তেমন গতানুগতিক স্মরণী কিছু নেই। কবিতা নতুন কবিতা লিখতে পারাই সব থেকে স্মরণীয়।
আফসার নিজাম : প্রেমে
পড়েছেন? আপনার জীবনে প্রেমের
বয়ান কি?
কচি রেজা : অসংখ্যবার
প্রেমের মতো এসেছে। তবে সত্যিকার প্রেম এসে বলেছে, এইটাই প্রেম---
আফসার নিজাম : সত্যিকারের
প্রেমের নমুনা কি?
কচি রেজা : তবে
প্রেম সে দেশপ্রেমই হোক আর মানবপ্রেমই হোক তা না থাকলে কবিতা লেখা যায় না।
আফসার নিজাম : রোমান্টিকতা
আপনার ভেতর কেমন খেলা করে?
কচি রেজা : সত্যিকারের
প্রেম এখনও বলার সময় হয় নি।
আফসার নিজাম : আমরা
পাঠক অপেক্ষায় থাকলাম। আপনার কবিতা সম্পর্কে বলেন। আপনার নিজের কবিতা
সম্পর্কে বলেন। আপনার কবিতায় কি থাকে। নিজের কবিতা অন্যের সাথে তুলনা।
কচি রেজা : লিখতে
চাই আগেরটার থেকে আরেকটু ভিন্ন। উপস্থাপনায় নিজস্বতা থাক। অন্যের কবিতার সাথে
তুলনা করতে পারি না।
আফসার নিজাম : আপনার
মতে ব্যক্তিস্বাধীনতা ও মুক্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা কোনটি?
কচি রেজা : মানুষের
মুক্তি নেই, এইটা আমার বিশ্বাস। নিজের অথবা অন্যের বেদনায় সে কাতর,
পীড়িত থাকবেই।
আফসার নিজাম : বাকস্বাধীনতা আপনা কাছে কিভাবে আসে। বাকস্বাধীনতায়
আপনার মতামত কি?
কচি রেজা : বুদ্ধ
যেমন সব ছেড়ে চলে গেয়েছিলেন,
আমার ও ইচ্ছে হয়। কিন্তু জানি, গৃহত্যাগী হলেই সিদ্ধার্থ হওয়া যায় না। বাক স্বাধীনতার রকম
ফের আছে তো।
আফসার নিজাম : যেমন
খোলাশা করলে ভালো হয়।
কচি রেজা : মানে
কবির বাক আর রাজনীতিকের বাক তো এক নয়। সদর্থে বলি, আমি বাক স্বাধীনতায়
বিশ্বাসী।
আফসার নিজাম : আপনার
জীবনে এমন কোনো ঘটনা আছে যা আপনাকে আমূল বদলে দিয়েছে?
কচি রেজা : কবিতা
আমাকে বদলে দিয়েছে। এই বদল আমার ভালো লেগেছে।
আফসার নিজাম : কিভাবে
তার কি স্ববিস্তার বর্ণনা পেতে পারি
কচি রেজা : আমি
অনেক কিছু হতে পারতাম। কিন্তু কিছু আমাকে টানে নি। ধরে রাখার ব্যাপার দু'পক্ষেরি
আছে। আমাকে
টেনেছে কবিতা। লিখতেই হবে এইটা ব্যাপার না। আমি আসলে পড়তেই বেশি ভালোবাসি,
সে গদ্য বা কবিতা আর গান আমার প্রাণ। চাকরি, রাজনীত, সমাজসেবা কিছু ভালো লাগে না
আফসার নিজাম : কবিদের
দায়বদ্ধতা আছে। এই দায়বদ্ধতা কি?
কচি রেজা : কবিতার
দায়বদ্ধতা অতি অবশ্যিক। ভালো কবিতা লেখা আর তা লিখতে গিয়ে একটু ভালো মানুষও হতে হয়। সংসার-সমাজ-দেশ
ও মানুষকে জানতে হবে মানতে হবে ভালোবাসতে হবে।
আফসার নিজাম : ভালো
মানুষ মানে কি? কি করলে ভালো মানুষ হওয়া
যায়?
কচি রেজা : যে
মাছ ধরে, বলুন তো সে কীভাবে ভালো জেলে হবে? কবিকে আগে মানুষ হতে হবে
আফসার নিজাম : কবিকে
মানুষ হতে হবে! মানে ভালো মানুষ! কবি আর কবিতার মধ্যে মিল অমিল কি?
কচি রেজা : কবি
বোধ হয় কবিতার কথা ভেবেই চলে ... আর কবিতা? সে তো অসুখ। অনারোগ্য বা
দুরারোগ্য।
আফসার নিজাম : দারুণ
বলেছেন। এক কবির সাথে অন্য কবির একটি বিরোধ থাকে কোনো?
কচি রেজা: আমার জীবন একটু ভিন্ন। যেমন আমি ছোটোবেলা থেকে দেশের বাইরে। দেশে থাকার ধারাবাহিকতা নেই বলে কাউকে তেমন চিনি না। আর কারুর সাথে খুব
প্রতিদিন মেশার সুযোগ নেই, তাই আমার সাথে কেউ বিরোধ করে না।
আফসার নিজাম : কাব্যহিংসা।
কচি রেজা: কবিতাও
মনে হয় কেউ পড়ে না।
আফসার নিজাম : কবিতার
পাঠক তো কবি। তার মধ্যেইতো যতো প্রতিভা।
কচি রেজা: প্রতিভা
বলে কিছু থাকে যদি তার নাম চেষ্টা।
আফসার নিজাম : আচ্ছা
এবার কিছু ব্যাক্তিগত প্রশ্ন করি। ভাইয়া কি করেন? সন্তান ক'জন।
তারা কে কি করেন।
কচি রেজা: ব্যক্তিগত
থাক। সময় এলে নিজেই বলবো।
আফসার নিজাম : আপনার
সম্পর্কে বলেন।
কচি রেজা: আর তো
কিছু নেই। বলা শেষ। লিখে যেতে চাই। আর সঠিক সময়ে থেমে যেতে চাই। জগতের ভান্ডারে অনেক
ভালো লেখা আছে, সেসব পড়তে হবে তো। নিজের তুচ্ছ লেখা নিয়ে বসে থাকলে চলবে না।
আফসার নিজাম : ধন্যবাদ। আজ তাহলে এ পর্যন্তই। বিদায়। ভালো থাকুন।
কচি রেজা: ধন্যবাদ
ও কৃতজ্ঞতা। আপনিও ভালো থাকুন
ক চি রে জা
'র ক বি তা
ভুল ছিলো না
মানুষজন্মে
আমাকে মিশিয়ে দাও ঘাসে মহাকালের ধুলায়
ছোটো মুথাঘাস মাড়িয়ে মাড়িয়ে যায় যাক কেউ
কিছুদিন হাত-পা দু'দিকে ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে হেঁটে
কিছুদিন গাছ আর মেঘ হয়ে উড়ে উড়ে বেঁচে
যখন একটি তারা খসে আর ফুলে ওঠে নদী
ছোটো মুথাঘাস মাড়িয়ে মাড়িয়ে যায় যাক কেউ
কিছুদিন হাত-পা দু'দিকে ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে হেঁটে
কিছুদিন গাছ আর মেঘ হয়ে উড়ে উড়ে বেঁচে
যখন একটি তারা খসে আর ফুলে ওঠে নদী
জেনেছি তারাও ভুল করে মানুষের চেয়ে বেশি
তাই কিছুকাল পিঠ ঘেঁষে বাস করি তার সাথে
জগতের দুঃখ-কষ্ট, কবিতার সম্ভাবনা নিয়ে
তাই কিছুকাল পিঠ ঘেঁষে বাস করি তার সাথে
জগতের দুঃখ-কষ্ট, কবিতার সম্ভাবনা নিয়ে
কাচ কাচ দিন
আশর্য একটি রক্তশূণ্য দিন আজ আকাশ থেকে নেমে
এসে থামে
তার চোখ কাটছে আমার যা কিছু কাচ
পৌরানিক ভংগিতে মুখ দেখছে আয়না, সুঠাম রাজহাঁস
তার চোখ কাটছে আমার যা কিছু কাচ
পৌরানিক ভংগিতে মুখ দেখছে আয়না, সুঠাম রাজহাঁস
অধিবৃত্ত সাঁতরাচ্ছে ,
যতবার এক হীরের পাতা, রক্ত হচ্ছে সকালের স্বরলিপি,
সূর্যোদয় ও আজ খেলছে বালিকার ঢঙে, যতবার হারে,
সূর্যোদয় ও আজ খেলছে বালিকার ঢঙে, যতবার হারে,
স্পর্শময়লালবটফল, ছায়ানাও খুঁজে ফেরে মাঝি,
নীচে পড়ে ভেঙে যাচ্ছে নীরব কাচের ঘোড়া,
গুঁড়ো গুঁড়ো চোখ
কাঁদছে এমন, খন্ডদিন কাঁপছে এমন।
নীচে পড়ে ভেঙে যাচ্ছে নীরব কাচের ঘোড়া,
গুঁড়ো গুঁড়ো চোখ
কাঁদছে এমন, খন্ডদিন কাঁপছে এমন।
বরফঘর
একটা জানালা ছিলো, খুললেই বরফ,
জোনাকির পিঠে ভর করে উড়ে আসা অন্ধকার আর পাথর,
আসলে ত এগোতে পারি নি, সারা বছরই তবু পাঁজরে দাঁড়িয়ে হাঁটতে চেয়েছি
তখনই পাতা ছড়ানো বন্ধ করে গাছ ভেঙ্গে পড়ে শীতকালের গায়ে,
বরফ থেকে বরফের দূরত্ব শুধু আয়না যেখানে একটি বোবা, মূক, আর
বিষাদ যন্ত্রণা, একটি হতচকিত, একটি পরাজয়ের প্রতিভাস,
মাঝে মাঝেই দেয়াল নেমে আসে, বন্ধ হয় চারদিকের আলো, নিঃশ্বাসও,
কতদিন তখন নখ দিয়ে ভাঙ্গতে চেয়েছি ইঁট, নিজের ঠেলে আসা প্রাণ মুঠিতে আঁকড়ে বলেছি,
ফেরাও, এই বধির জন্ম', এখানে রোদের সুতীব্র চুম্বন নেই, বাকলে কাঠঠোকরা নেই,
সুনামি নেই, নেই কন্ঠ ফাটানো চিৎকার আর অতল সাঁতার ...
জোনাকির পিঠে ভর করে উড়ে আসা অন্ধকার আর পাথর,
আসলে ত এগোতে পারি নি, সারা বছরই তবু পাঁজরে দাঁড়িয়ে হাঁটতে চেয়েছি
তখনই পাতা ছড়ানো বন্ধ করে গাছ ভেঙ্গে পড়ে শীতকালের গায়ে,
বরফ থেকে বরফের দূরত্ব শুধু আয়না যেখানে একটি বোবা, মূক, আর
বিষাদ যন্ত্রণা, একটি হতচকিত, একটি পরাজয়ের প্রতিভাস,
মাঝে মাঝেই দেয়াল নেমে আসে, বন্ধ হয় চারদিকের আলো, নিঃশ্বাসও,
কতদিন তখন নখ দিয়ে ভাঙ্গতে চেয়েছি ইঁট, নিজের ঠেলে আসা প্রাণ মুঠিতে আঁকড়ে বলেছি,
ফেরাও, এই বধির জন্ম', এখানে রোদের সুতীব্র চুম্বন নেই, বাকলে কাঠঠোকরা নেই,
সুনামি নেই, নেই কন্ঠ ফাটানো চিৎকার আর অতল সাঁতার ...
কোন মন্তব্য নেই