Header Ads

Header ADS

রাজনীতি ছড়াকে প্রভাবিত করে আর ছড়াও রাজনীতিকে প্রভাবিত করে_মতিউর রহমান মল্লিক


মল্লিক ভাইয়ের কাছে থাকা সৌভাগ্য আমার হয়েছে। কিন্তু একটি সাক্ষাৎকার নিতে আমাকে অনেক অনেক দিন ঘুরতে হয়েছে। তিন কথার একটি সাক্ষাৎকার হলেও আমি আপনার সাক্ষাৎকার নেব বলে যখন গো ধরেছি তখন তিনি আমাকে কয়েকটি কথা বললেন। তাই দিয়েই আমি আমার ‘নিব’ এ প্রকাশ করি ফেব্রুয়ারি-২০০১ সংখ্যায়। সেই সাক্ষাৎকারটি আমার ব্লগে প্রকাশ করলাম।


ছড়া রাজনীতিকে কতোটুক প্রভাতিক করে?
আমি মনে করি রাজনীতি ছড়াকে প্রভাবিত করে আর ছড়াও রাজনীতিকে প্রভাবিত করে। একজন লেখক ছড়া লিখে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দেয় তখনই ছড়ার ইমেজ জনগণের মাধ্যমে রাজনীতিতে ছড়িয়ে পড়ে রাজনীতিকে প্রভাবিত করে। যেমন গুডবাই কারুন চললাম/সামনেই মুক্তির সংগ্রাম।

ছড়া ও কবিতার মধ্যে পর্থক্য কী?
ছড়া ও কবিতার মধ্যে আমি কোনো পার্থক্য করি না। কারণ- কোনো কোনো ছড়া কবিতার বিষয় ধারণ করে কবিতা হয়। আবার কোনো কোনো কবিতা ছড়ার প্যার্টান গ্রহণ করে ছড়া হয়ে যায়। অতএব কবিতাই ছড়া, ছড়াই কবিতা।



আপনার কালের ছড়ার মূল্যায়ন করুন?
আমি মনে করি আমার কালে সবচেয়ে ভালো ছড়া লিখা হয়েছে। আমাদের ছড়া বিশ্বাসের কাছে ফিরে এসেছে। তাই আমাদের ছড়া যেমনÑ নতুনত্ব গ্রহণ করেছে তার মূল্যায়ন ও নতুনত্ব দাবি করে।

আপনার চোখে আপনার ছড়া?
আমার ছড়া আমার থেকে পাঠকরা বেশি মূল্যায়ন করতে পারবে। এটা তাঁদের উপরই ছেড়ে দিলাম।

আপনার মতে নব্বই-এর ছড়া, তাদের উদ্দেশ্যে আপনার বক্তব্য?
নব্বই দশক স্বর্ণগর্ভ দশক। তাদের সবকিছুই প্রচন্ড শক্তিশালী। ছড়াতেও তারা শক্তিশালী। তাদের উদ্দেশ্য রসূলের একটি বাণী উচ্চাণ করতে চাই ‘আল্লাহতালা কোনো কোনো জাতিকে এ কিতাব [কুরআন] দ্বারা উচ্চশির করে দেবেন আর কোনো কোনো জাতিকে এ কিতাব [কুরআন] পরিত্যাগ করার কারণে লাঞ্ছিত করে ছাড়বেন।

নবীন-প্রবীনদের মধ্যে কাদরে ছড়া ভালো লাগে?
আবু সালেহ, রুহুল আমিন খান, সজজাদ হোসাইন খান, আবদুল হাই শিকদার, মোশাররফ হোসনে খান, আসাদ বিন হাফিজ, আহমদ মতিউর রহমান, লুৎফর রহমান রিটন, গোলাম মোহাম্মদ, লুৎফুল খবির, নুরুজ্জামন ফিরোজ, জাকির আবু জাফর, আতিক হেলাল, রফিক মুহাম্মদ, আহমদ বাসির, ফয়েজ রেজা, রেদওয়ানুল হক, রকীবুল ইসলাম, জাকারিয়া আজাদ ও তোমার ছড়া আমার ভালো লাগে।

মতিউর রহমান মল্লিক এর কয়েকটি ছড়া

ক্ষুদে মরিচ

ক্ষুদে মরিচ ক্ষুদ্র তবু
    ভীষণ রকম ঝাল তাতে,
একটুখানি চিবাও যদি
    জ্বলে ভীষণ গাল তাতে।

সারাদেহ উল্টা তার,
যেমন জাত ও কুলটা তার,
তাই তারে কেউ কয় যে খাঁড়া,
টকটকে লাল ছাল যাতে
ক্ষুদে মরিচ ক্ষুদ্র তবু
    ভীষণ রকম ঝাল তাতে।

ক্ষেতের মরিচ ক্ষেতেই পাবে
চতুর্দিকে আল যাতে
ক্ষুদে মরিচ ঘরের কাছে
হয় যে অনেক ডাল তাতে।

আকাশী তার অন্য নাম,
পান্তাভাতে অন্য দাম,
লবণ দিয়ে মাখলে দারুণ
হয় যে স্বাদু ডাল তাতে।
ক্ষুদে মরিচ ক্ষুদ্র তবু
    ভীষণ রকম ঝাল তাতে।

ক্ষুদে মরিচ মেশাও যদি
লাল ভেবে কেউ আলতাতে
এবং মাখো বুঝবে তখন
কেমন আছে মাল তাতে।

মেজাজ যে তার ফটাংফট,
ক্ষেপলে করে চটাংচট,
চোখের পানি বেরিয়ে ছাড়ে
ঠিক থাকে না তাল তাতে।
ক্ষুদে মরিচ ক্ষুদ্র তবু
    ভীষণ রকম ঝাল তাতে।

একটা ক্ষুদে মরিচ ডলে
নুনের সাথে চালতাতে,
খায় যদি ঠিক দশ বারো জন
মারবে দু'শো ফাল তাতে।

তাই তারে কয় বিষমরিচ,
কোথায় যে তার পাই হদিস?
বললো সে এক সদরঘাটের
হোটেলওয়ালা কাল রাতে।
ক্ষুদে মরিচ ক্ষুদ্র তবু
    ভীষণ রকম ঝাল তাতে।


মুন্নার পান্ডা

মুন্নার পান্ডাটা তুলো দিয়ে বানানো
কিনে দিয়েছিল যেটা মুন্নার মা-নানু।

পান্ডাটা দেখতে যে কিম্ভূতকিমাকার
দেখলে তা বুক কাঁপে, এমএ পাশ সীমা’পার
যদিও উচিৎ নয় এ-খবর জানানো।

পান্ডার জন্যেতো আগে থেকে খাঁচা নেই
তবু তা ধরতে গেলে কারো আর বাঁচা নেই
মুন্নার দুই হাত লাঠি আছে শানানো।

মুন্না যেখানে যায় পান্ডাটা সাথে রয়
কেউ যদি চুরি করে সারাক্ষণ এই ভয়
পান্ডাটা ছুঁলে তাই বলে ওঠে না না নো।



লড়াই

মারলে একটা পাখির ছানা
একটাই যায় মরে,
ছিঁড়লে একটা ফুলের কলি
একটাই যায় ঝরে।

কিন্তু একটা মারলে মানুষ
করলে একটা খুন-
খুন করা হয় সকল মানুষ
সকল তমদ্দুন।

তাই খুনিদের বিরুদ্ধে হও জড়ো-
লড়াই লড়াই তুমুল লড়াই করো।




ছড়া

এক.
কবিগুরুর কোলকাতাতে
বাংলাভাষা হাওয়া
বাংলা কথা বলার মতো
যায় না মানুষ পাওয়া

বাঙ্গালী যাও ভাংগাচোরা আছে
বড়ই মধুর হিন্দি তাদের কাছে।

দুই.
রাষ্ট্রভাষা বাংলা হউক
চায়নি কবিগুরু
চাইয়া ছিলেন হিন্দিভাষা
ধইরা গান্ধীর উরু

জোড়াসাঁকোর চতুর্দিকে তাই
হিন্দি ছাড়া বাংলাভাষা নাই।

তিন.
বাংলাভাষা ঢাকায় এখন
কোলকাতাতে ঠুস!
রবীন্দ্রনাথ কোথায় যাবেন?
নাই দাদাদের হুঁশ!

বাংলাভাষার রাজধানী আজ ঢাকা
ঠিক সময়ে ঘুরল কালের চাকা।



টিভি

টিভি দেখবে? দেখো না হয়-
কিন্তু একটু কম দেখো,
নইলে রাতের ঘুমের ভেতর
আস্ত একটা যম দেখো।

পড়ার ঘরে দিয়ে তালা,
টিভির ঠেলায় অনেক জ্বলা !
ক্লাসের বেলায় ঠিক বারোটা
বাজবে যে একদম দেখো।

খাদ্য-খাবার যা-ই মেলে,
জোর করে যে তা-ই গেলে,
তার কপালে কেবলই হায়!
নিত্য বদ-হজম দেখো।

টিভির ভেতর মন্দ আছে,
তেমনি যে দুর্গন্ধ আছে !
তাইতো ক্ষতির যা-কিছু-সব
বাদ দিয়ে উত্তম দেখো।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.