Header Ads

Header ADS

আমি প্রকৃতির সামান্য ছাত্র মাত্র সেখান থেকেই শিক্ষা গ্রহণ করছি_আফসার নিজাম

 
আমি প্রকৃতির সামান্য ছাত্র মাত্র সেখান থেকেই শিক্ষা গ্রহণ করছি
আফসার নিজাম

[সমকালীন সৃজনশীল অবস্থানে যে কজন চিন্তাশীল মানুষের অবস্থান আমাদের মাঝে পরিলক্ষীত হয় তাদের মধ্যে আফসার নিজাম অন্যতম। খুব বেশি লেখালিখি করেন তেমন নয় কিন্তু চিন্তার পরিশীলতা, নতুন চিন্তকদের মনন গঠনে তার কাজ আমরা অনুধাবন করি। তরুণ সৃজনশীলরা তার সংস্পর্শে জ্বলে ওঠে সৃজনশীলতায়। তিনি আপাদমস্তক নিজের ভেতরেই লুকিয়ে থাকেন। শামুকের মতোই আবৃত করে রাখেন নিজের প্রতীভা কবি। কারো কাছে নিজেকে জানান দেয়ার খাসলত তার ভেতরে নেই। তিনি কেবল নতুনদের মধ্যে কিভাবে আরো সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করা যায় সেই দিকে নজর রাখেন। নিজের জন্য কিছু করার ফুসরত পায় না। আমরা সারাজীবন তার থেকে কিছু শিখার জন্য উদগ্রীব হবে থাকি। তার ভেতরে যতোটুকু জ্ঞানের ভা-ার থাকে তা আমাদের মধ্যে বিলিয়ে দেন। এমন একজন মানুষের সাথে কিছু কথা বলতে পেরে আমরা আনন্দ অনুভব করছি। পাঠক আমরা আশা করি আপনাদেরও আনন্দ বোধ জাগ্রত হবে। যদিও সময়ে সল্পতায় বেশি কিছু গ্রহণ করা গেলো না তবে আগামীতে তার সাথে দীর্ঘ আলাপের ফুসরত রেখে গেলাম। -সম্পাদক]



প্রতীক ওমর : ভাইয়া কেমন আছেন।
আফসার নিজাম : আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ আমাকে যখন যে অবস্থায় রাখেন সে অবস্থাকেই আনন্দের সাথে উপভোগ করি। কেমন আছি সে কথার চেয়ে কিভাবে থাকবো সে আলাপটি আমাদের মাঝে গুরত্ব সহকারে বিবেচনার বিষয় হওয়া প্রয়োজন। আজকের দিনটি আগামী দিনের জন্য কিভাবে প্রস্তুত করা যায় তার জন্য চিন্তা করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য হওয়া দরকার। আল্লাহর রসুল সা. বলেছেন- ‘আজকের দিন অপেক্ষা আগামী দিন যার উত্তম নয় তার জন্য লা’নত।’ অতএব ভালো আছি আগামী দিন আরো ভালো থাকার জন্য।

প্রতীক ওমর : জ্বি আমাদের আগামী দিন তাই হোক। একটু সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করাবো। আমরা লিটলম্যাগাজিন করি কিন্তু একটি লিটল ম্যাগাজিন কেমন হওয়া দরকার।
আফসার নিজাম : লিটল ম্যাগাজিন কেমন হওয়া দরকার তার আলোচনার আগে প্রয়োজন লিটল ম্যাগাজিনকে বুঝা। লিটল ম্যাগাজিন মানে তারুণ্য। তরুণের ভাষা, প্রেম, দ্রহ, রাগ, অভিমান, রাজনীতি, অর্থনীতি, দর্শনকে জনসমাজে কাছে উপস্থাপনের মাধ্যম হলো লিটল ম্যাগাজিন। যারা লেখালিখি করে শুধু তাদেরই জন্য লিটল ম্যাগাজিন তা নয়। লিটল ম্যাগাজিন মূলত তরুণের মুখপত্র। সমসাময়ীক বিষয়কে সমাজের তরুণ যে ভাষায় কথা বলে, চিন্তা করে, আচরণ করে তাই লিপিবদ্ধ হয় এই ম্যাগাজিনে। সেটা কবিতা হোক, গল্প হোক, প্রবন্ধ হোক, নাচ-গান-নাটক বা চিত্রকলা হোক। সেটাই মূলত লিটল ম্যাগাজিনের রসদ। এখান থেকেই বুঝে নিতে পারি লিটল ম্যাগাজিন কেমন হওয়া দরকার। যে তরুণ একজন পৌড়ের মতো করে কথা বলে, তার মতো কাজ করে তার জন্য লিটল ম্যাগাজিন নয়। সে আগামীকে ধারন করতে জানে না। অতীতকে তার আদর্শ হিশেবে ধরে নিয়েছে। এই বিষয়টিকে চিন্তা করে আমাদের লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে কাজ করতে হবে। তরুণ তার সমাজের যাবতীয় অনাচার, বিশৃঙ্খলা সম্পর্কে যে অভিজ্ঞতা লাভ করে তার বিপরীতে যে চিন্তা খাড়া করে তা নিয়েই লিটল ম্যাগাজিন।


প্রতীক ওমর : বাংলাদেশের তারণ্য নির্ভর লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশ হয়!
আফসার নিজাম : আসলে তারণ্য নির্ভরই লিটল ম্যাগাজিন। তরুণ যখন নিজের চিন্তার জগৎ থেকে বের হয়ে উঁকি দিতে ভুলে যায় তখন তাকে বার্ধক্য বলে। সে নিজের ভিতর যে জগৎ তৈরি করে তার ভেতরেই বসবাস করতে পছন্দ করে। তখন সে নতুন কোনো তরিকায় নিজেকে খাপখাওয়াতে পারে না। তখন আর তার লিটল ম্যাগাজিনের দরকার পড়ে না। তার প্রয়োজন হয়ে ওঠে শুধু কেবল ম্যাগাজিনের। যা চিরায়ত। এটা তার দোষ নয় বরং এটাই প্রকৃতি। প্রকৃতিকে কেউ শাসন করতে পারে না। যে কোনো উসিলায় নিজেকে জানান দেয়। এই যে একজন তরুণ সে সকল বাধাকে উপেক্ষা করছে তাও প্রকৃতি। তাই বলবো লিটল ম্যাগাজিন হলো তারুণ্যের মুখপত্র। এটা কেবলি তার জন্য। সেই নতুন ভাবে নির্মাণ করতে চায় তার পথ। আর সেই পথে হাঁটার জন্য পাথেয় করে লিটল ম্যাগাজিন।

প্রতীক ওমর : সাহিত্যের পরমার্শ, সমস্যা, সম্ভাবনা তুলে ধরা হয় গদ্যে। সেই গদ্যের লেখক বাংলাদেশে নতুন করে তৈরি হচ্ছে না, এর কারণগুলো কি মনে হয় আপনার কাছে?
আফসার নিজাম : সাহিত্য কোনো পরার্শ দিয়ে চলে না। আবার আলোচকের আলোচনার মাধ্যমেও চলে না। সে প্রকৃতি। নিজের ছন্দে চলতে থাকে। কোথাও বাধা পেলে সে অন্য রাস্তা ধরে তার গন্তব্যে পৌঁছায়। কিন্তু আমরা রাবীন্দ্রক বলয়ে থাকার সময় জানতাম না তার থেকে বের হয়ে আসার পথ। তার বিরুদ্ধ নিজেদের অস্ত্র সান দেয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারিনি। ত্রিশের দশকের কিছু লেখক তারা সচেতনভাবে তার বলয় ভাঙার জন্য কাজ করেছে। আদাজল খেয়ে নিজেদের জানান দিয়েছে। এধরনের ক্রসেড করে কোনো ফায়দা হয়নি। বরং সাহিত্যকে জনসমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। আখেরে বাংলা সাহিত্য হয়ে ওঠেছে একটি শ্রেণির সাহিত্য। আনন্দভোগ করার সামগ্রী। কিন্তু সাহিত্য তো থেমে থাকে না। রবীন্দ্র বলছে স্বীকার করেই নজরুল জানান দিলো। সাহিত্যের পথ ভিন্নও হতে পারে। আর সে পথে অগ্রসর হলেই কামিয়াব। নজরুল তাই কারো পরামর্শ বা সমালোচনার কাছে নিজেকে সপে না দিয়ে নিজের প্রকৃতিকে ব্যাবহার করেছে। প্রকৃতিকে বাধাগ্রস্থ না করে তাকে ব্যবাহার করেই আমরা সৃষ্টি করতে পারি মহান সাহিত্য। এ সাহিত্য গদ্য হোক আর পদ্য। সাহিত্যকে প্রথমে সাহিত্য হতে হবে। আর তা হতে হবে জন মানুষের সাহিত্য। কারণ মানুষ ছাড়া আর কোনো প্রাণীই সাহিত্যের রস গ্রহণ করে না। অতএব জনমানুষের চিন্তা, রাজনীতি, অর্থনীতি বা সার্বি জীবনব্যাবস্থাকে নিয়েই সাহিত্য হতে হবে। আর এ বিষয়গুলো যদি আলোচনা করা যায় তবেই আমাদের জন্য কল্যাণকর। গদ্য রচনার জন্য যেমন বেশি বেশি পাঠ প্রয়োজন ঠিক তেমনি প্রয়োজন অভিজ্ঞতার। আমার পাঠ ও অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে সামনে এগোতে পারছি না বিধায় গদ্য সাহিত্য আমাদের তেমন হয়ে ওঠে না। পরিশ্রমহীন কিছু কথামালা দিয়ে কাব্য করতে আসে। এই প্রবণতা যেমন একটি জনসমাজে প্রয়োজন তেমনি নান্দকি বোধ সমৃদ্ধ চিন্তার প্রতিফলন ঘটে তেমন সাহিত্যও প্রয়োজন আর এভাবেই হয়তো আমাদের সাহিত্য হয়ে ওঠবে সমসাময়ীক জীবনের প্রতিফলন।

প্রতীক ওমর : তরুণরা বই না পড়ে, সাহিত্য না পড়ে লেখা শুরু করছে ইদানিং এসব লেখকদের এবং তাদের লেখাগুলোকে আপনি কিভাবে মূল্যায় করবেন?
আফসার নিজাম : তরুণদের একতরফা দোষারোপ করা কতোটুকু সমিচিন তা ভেবে দেখতে বলবো। কারণ তরুণরা বই পড়ে না এটা ভুল প্রমাণিতও হতে পারে। বইমেলা যারা যায় তাদের সিংহভাগ তরুণ। বইমেলায় কিন্তু ব্যাপক বই বিক্রি হয়। এই বইগুলোর ক্রেতা কিন্তু তরুণরা। তাহলে আমরা কিভাবে তাদেরকে দোষারোপ করবো যে তারা বই পাঠ করে না। আবার এই ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেট যেসব লেখা পাঠ হয় তার সিংহভাগ কিন্তু এই তরুণরাই দেখে থাকে। তারাই পাঠ করে এই বইগুলো। তাহলে তরুণদের বই না পাঠ করার দোষে দোষি করতে পারছি না। তরুণদের সাথে অতরুণদের একটি মানষিক দূরত্ব আছে। যারা তাদের তারুণ্য হারিয়েছে তারা এই তারুণ্যকে ইর্ষা করে। সেই ইর্ষার যে বয়ান তৈরি করে তাহলো ‘তরুণরা আজ কিছুই করছে না। আমাদের সময় কতো কি করতাম।’ তাহলে কি আমরা বলবো এই সময়টা তাদের মানে পৌড়দের নয়। হা তাদের নয়। তারা তাদের তারুণ্য হারিয়েছে। তাই তারুণ্যে প্রতি তাদের ইর্ষা প্রকাশ করে মাত্র।
পরের বিষয়টি আসি। সাহিত্য না পড়েই ইদানিং সাহিত্য করছে। আসলে সাহিত্য করার বিষয় না। সাহিত্য হলো তার ভেরতের চিন্তাগুলো গুছিয়ে প্রকাশ করা। ভিতরে ভিতরের সবাই সাহিত্য করে কিন্তু একজন তা প্রকাশ করতে পারে অন্যজন তা পারে না। যে পারলো তাকে আমরা সাহিত্যিক বলে সনাক্ত করি। আর একটি বিষয় হলো সাহিত্য করতে গেলে কি পড়তেই হবে। না। না পড়লেও সাহিত্য করতে পারবে। একজন উম্মি/মুর্খ (প্রচলিত অর্থে শিক্ষিত না) কিভাবে তার লোকসাহিত্য রচনা করে যা যুগ যুগ ধরে মানুষের চিন্তাকে অনুপ্রাণীত করে চলে। আসলে সে কতোটা অভিজ্ঞতাকে সঞ্চয় করতে পারে। আর সে অভিজ্ঞতা বই পাঠ থেকে, ভ্রমণ থেকে, সামাজিক, রাজনৈতিক টানাপোড়ন থেকে, সংসারজীবন থেকে অর্জন করেছে তাই মুখ্য। আমরা তার অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে মূল্যায়ন করবো। তবেই প্রকৃত মূল্যায়ন হবে। ধুলা কতোটা স্থায়ী হবে তা ঝড় উঠলেই আমরা বুঝতে পারি। এ নিয়ে কোনো চিন্তার দকার নেই। কার লেখা হলো কার লেখা হলো না এই নিয়ে গবেষণা করে নতুন কি চিন্তা করছি তা নিয়ে ভালোই বেশি সোয়াব হবে।

প্রতীক ওমর : ফেসবুক সাহিত্যের বিকাশে ভূমিকা রাখছে না সাহিত্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে?
আফসার নিজাম: ফেসবুক আসলে কি। আমার লেখার খাতা। ফেসবুক গ্রুপ আমার লিটল ম্যাগাজিন। এটা যখন আমরা অনুধাবন করতে পারবো তখন এই আলোচনা করতে সহজ হবে। ফেসবুক আমাদের পাড়ার ক্লাব বলতে পারি। আশির দশকে যখন ক্লাব সংস্কৃতি আমাদের জ্ঞানের উঠান হয়ে উঠেছিলো আজ আমাদের ফেসবুকও জ্ঞানের উঠান। বলতে পারেন এখানে অন্য কিছুও হয়। আমি বলি হা হয়। যেমন আশির দশকের সেই মহান ক্লাবগুলো যখন নষ্টদের হাতে চলে যায় তা একটি আমাদের আলোর উঠোন থেকে ছিটকে পরে। ফেসবুকও যদি সেই অবস্থায় চলে আসে তা হলে আমাদের দুঃখ করার কিছু থাকবে না। এটাই নিয়তি। এটাই প্রকৃতি। তাকে যতো সহজেই স্বীকার করতো ততোই কল্যাণ আমাদের জন। যে তরুণটি আজ অন্য কোনো দুষ্ট কাজে মত্ত থাকতো সে আজ ফেসবুকে কবিতা লিখছে। এই যে কবিতা লিখছে এর থেকে বড় পাওনা সমাজের জন্য আর কি হতে পারে। তার কবিতা হয় না, তার ছড়া হয় না, তার গল্প হয় না। এটার দায়িত্ব তোমার না। তুমি শুধু কল্যাণকর সাহিত্য কিরূপ হয় তার একটি আলোচনা তার সাথে শেয়ার করে নিতো পারো। তাকে ফোর্স করতে পারো না। তাকে বলতে পারো না তোমার সাহিত্য সাহিত্য না। অতএব আমরা বলতে পারি ফেসবুক সাহিত্য সমাজ দেশের জন্য কল্যাণকর। যতোটুকু প্রতিবন্ধকতা তা শুধু আমাদের ননডিজিটাল মাইন্ড।

প্রতীক ওমর : ছোট গল্পের লেখক কমে যাচ্ছে এর পিছনে কারণ কি?
আফসার নিজাম : কম পরিশ্রমই আমাদের গদ্য লেখক কম হওয়ার কারণ। এজন্য এদেশের কোনো লেখককে দায়ী করার প্রয়োজন নেই। কারণ বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানই এর জন্য দায়ী। বাংলাদেশ এমন একটি অবস্থানে আছে যেখানে অল্প পরিশ্রমে বেশি আয় করা সম্ভব। অল্প একটু চাষাবাদ করলে সারা বছরের খোরাকী জুটে যায়। নদী নালা খাল বিল বেশি থাকায় মাছের কোনো অভাব হয় না। নদীমাতৃক এই দেশে ছয় মাস থাকে বর্ষা আর ছয় মাস থাকে উন্না (শুষ্ক)। তাই শুষ্ক মৌসুমে তারা উৎপাদন করে আর বর্ষা মৌসুমে খায়। মাত্র ছয় মাস পরিশ্রমে গুষ্টিসুদ্ধ খাওয়ার ব্যাবস্থা যেখানে হয় সেখানে বেশি পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় না। তাই তো দেখি এদেশের মানুষ অল্প পরিশ্রমে কবিতা লিখে। বেশি পরিশ্রমে গল্প লিখতে যায় না। আরও একটি কারণ বিরাজ করে গদ্য কম লিখার জন্য। এদেশের মানুষ বেশ আবেগী। কবিতায় যতোটা আবেগ ঢেলে দেয়া যায় গদ্যে সে অবস্থানে যেতে সময় লাগে। গদ্যের লেখক কমছে না বরঞ্চ আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা খোঁজ খবর রাখতে পারছি না নাগরিক ব্যবস্ততার কারণে। একটু চোখ বুলালেই দেখতে পাবো কতোটা গদ্য চলছে আমাদের ভাষা নদী দিয়ে।

প্রতীক ওমর : গল্প এবং গদ্যের বিকাশে তরুণদের জন্য আপনার পরামর্শ কি ?
আফসার নিজাম : আমি নিজেই একটা নাদান। অভিজ্ঞতার ঝুলি এতোটাই ছোট যে অন্যকে পরামর্শ দেয়ার উপায় নেই। আমি নিজে যতোটা পারি অভিজ্ঞতা ভিতর দিয়ে যেতে চেষ্টা করি। একটি জীবনকে ভালোভাবে পরখ করি। একটি কুকুর কিভাবে হাঁটে, কিভাবে খায়, কিভাবে প্রেমিকাকে আলিঙ্গণ করে, কিভাবে তার শিশুকে লালন পালন করে, কিভাবে অন্যান্য প্রাণীদের সাথে সহঅবস্থান করে, মানুষকে সে কিভাবে দেখে এসব অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়েই একটি গল্প গল্প হয়ে ওঠে। আমার মহল্লার পাগল মেয়েটি কি ধরনের আচরণ করে, মহল্লার মাস্তন ছেলেটি কিভাবে বোরখা পরা মেয়েটিকে পছন্দ করে শিস দেয়। রাতের অন্ধকারে ঝোপের আড়ালে যে আদান প্রদান হয় তাও দেখি। মনোযোগ দিয়ে দেখি। মসজিদে যাই। মসজিদে যে মানুষটি অতি দয়ালু দাতা, মসজিদের বাইয়ে সেই মানুষটির অন্য জীবনও আমার দেখার বিষয় হয়। আমি পরিবার থেকে রাস্ট্র পর্যন্ত দেখি। আমি আমার চোখে দেখি, আমি আমার বাবার চোখে দেখি আবার সন্তানের চোখেও দেখি। আমার সম্পর্কে থাকা মানুষের অভিজ্ঞতাকে পাঠ করি। আর এভাবেই আমার গল্প গদ্য নির্মাণ করি। আমার তরুণদের পরামর্শ দেবার কি আছে। আমি তো উম্মি, নালায়েক, নাদান। প্রকৃতির সামান্য ছাত্র মাত্র। আমি সেখান থেকেই শিক্ষা গ্রহণ করছি।

প্রতীক ওমর : আপনাকে ১ মিনিটে কিছু বলতে বললে কি বলবেন!
আফসার নিজাম : মানুষ হতে চাই। মানুষের ভালোবাসা পেতে চাই। আর এই ভালোবাসা নিয়ে চলে যেতে চাই।

প্রতীক ওমর : আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ নিজাম ভাই।
আফসার নিজাম : তোমাকে আমার ভালোবাসা। আল্লাহ তোমার ওপর শান্তির জোসনা বর্ষিত করুন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.