Header Ads

Header ADS

ছড়া মুখে তুলে দেয় প্রতিরোধের শৈল্পিক চাবুক_জাকির আবু জাফর


ছড়া মুখে তুলে দেয় প্রতিরোধের শৈল্পিক চাবুক
জাকির আবু জাফর


জাকির আবু জাফর (জন্ম : পহেলা জুলাই ১৯৭১) নব্বইয়ের দশকের কবিদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তিনি একাধারে লেখক, কবি, ছড়াকার, উপন্যাসিক, গীতিকার এবং সম্পাদক হিসেবেও খ্যাতিমান। প্রায় ছয়ত্রিশটির মত গন্থের রচয়িতা তিনি। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি পেয়েছেন বহু পুরস্কার ও সন্মাননা পদক। কবি হিসেবে তিনি যেমন খ্যাতি অর্জন করেছেন তেমনি অনেক নন্দিত গান লিখে গীতিকার হিসেবেও সমানভাবে জনপ্রিয়। এছাড়া লিখছেন ছড়া, উপন্যাস, থিলার ও প্রবন্ধ। আধুনিক বাংলা সংগীতের ধারা। আশির দশকের শুরু থেকে এক নতুন মাত্রায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। প্রকৃতি, প্রেম আর বিশ্বাসের নিগুঢ় চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আমাদের সংগীতাঙ্গনকে ভিন্ন স্বাদ এবং সুরে বিকশিত করে তােলে একদল সংগ্রামী প্রতিভাবান তরুণ গীতিকার। মননশীল কবিদের হাতের ছােয়ায় সংগীতাঙ্গন হয়। সুষমামন্ডিত। আশির এই সূচনা নব্বই দশকে অনেকটাই পরিপূর্ণতা লাভ করে। কবি জাকির আবু জাফর নব্বই দশকের একজন বিশ্বাসী মেধাবী কবি গীতিকার। জাকির আবু জাফর মূলত একজন কবি। তার কবিতায় আধ্যাত্নিকতা। ও রােমান্টিকতা যেমন শৈল্পিক এবং নান্দনিকভাবে প্রস্ফুটিত, = তেমনি তার সংগীত ও বিশ্বাসী চেতনায় হৃদয়বৃত্তি এবং প্রকৃতির নিপুণ সৌন্দর্যকে ধারণ করে হয়েছে প্রাণস্পর্শী। এক কথায় বলা যায় তার সংগীত কাব্য স্বাদে সমৃদ্ধ ।। কবি জাকির আবু জাফরের সংগীতের বিষয়বস্তুতেও রয়েছে ব্যাপক বৈচিত্রময়তা। কবিতার মতই তার সংগীতের বিষয়বস্তু হিসেবে মানব মানবীয় প্রেম যেমন এসেছে, প্রকৃতি, দেশপ্রেম 'ইতিহাস ঐতিহ্য ও এসেছে খুব বলি তাণে। তবে আধ্যাত্নিক চেতনাই তাৰ সংগীতকে গেছে মহিমাণিত।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন : তাঁর জন্ম ১৯৭১ সালের পহেলা জুলাই।বাংলাদেশের ফেনী জেলার অন্তর্গত সোনাগাজী উপজেলার দক্ষিণ পূর্ব চর চান্দিয়া গ্রামে। তাঁর পিতা মুহাম্মদ ওবায়দুল হক ও মাতা সালেহা খাতুন। গ্রামেই পড়াশোনার শুরু করেন। পরে বি এ অনার্স,এম.এস.এস. (লোক প্রশাসন) সম্পন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

কর্মজীবন : কিশোরকাল থেকে সাহিত্য অঙ্গনে কাজ করছেন। তিনি বাংলাদেশ সংস্কৃতিকেন্দ্রে গবেষণা কর্মকর্তা ছিলেন। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রথম সারির জাতীয় দৈনিক ' দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকায় সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন।

প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ : কবিতা গ্রন্থ ♦আরো একটি উৎসবের গান(২০১৬) ♦ব্যক্তিগত জোছনার বিজ্ঞাপন(২০১৫) ♦বাছাই কবিতা(২০১৪) ♦প্রকৃতি ও প্রেমের কবিতা(২০১৩) ♦নির্বাচিত ১০০ কবিতা (২০১৩) ♦মেঘের মানচিত্র অথবা বনান্তরের দিন(২০১১) ♦অজস্র বর্ষণে চিরদিন(২০১০) ♦তোমার সমস্ত গোপন (২০০৯) ♦রোদের ও আছে অন্ধকার(২০০৮) ♦নির্বাচিত কবিতা (২০০৮) ♦তোমাকে ভিজিয়ে দেব চাঁদের বৃষ্টিতে(২০০৭) ♦রাত ও রৌদ্র(২০০৬) ♦বৃষ্টির বৃত্তান্ত শোনে রাতের আকাশ(২০০৫) ♦মুখোমুখি আজীবন(২০০৪) ♦নন্দিত বেদনা (১৯৯৮) ♦কালের সমুদ্র(১৯৯৭)

গীত কবিতা : ♦ভাঙো বাঁশি এই নিরালা(২০০২)

ছড়া-কবিতা : ♦যখন আমি একলা থাকি (২০১৪) ♦ইচ্ছে রাজার ঘোড়ক(২০১০) ♦বনের পাখি মনের পাখি(২০০৭) ♦জোনাকি আগুন(২০০৭) ♦দুষ্ট ছেলে(২০০৬) ♦লাল নীল প্রজাপতি(২০০৫) ♦এক রাখালের গল্প(২০০৫) ♦ফুলে ফুলে দুলে দুলে(২০০০) ♦দোয়েল পাখির গান(২০০০) ♦চাঁদের ভেলা(১৯৯৭)

উপন্যাস : ♦জোসনারা সারারাত(২০০১)

কিশোর উপন্যাস : ♦আট চোখের দুরন্তপনা(২০১২) ♦রহস্য পাহাড়(২০০৮) ♦আকাশের ওপারে আকাশ(২০০৫) ♦রাত্রি ভয়ংকর

কিশোর গল্প : ♦পাতার বাশিঁওয়ালা(২০০৯) ♦চাঁদ(২০০৮)

সংকলন : ♦নির্বাচিত কিশোর সংকলন (২০১৩)

সম্পাদনা : ♦ আহা ফিলিস্তিন(২০১৫)




আফসার নিজাম : ছড়ার সংজ্ঞা কি?
জাকির আবু জাফর : ছড়া ছন্দের অলংকারে সাজানো তীর। সেদিকে তাক করা হয় তাকেই বিদ্ধ করে। মানুষের আবেগ ও অনুভূতিকে বিজলীর মতো চমকে দেয়। কিংবা মুখে তুলে দেয় প্রতিরোধের শৈল্পিক চাবুক, তাই ছড়া।

আফসার নিজাম : কে ছড়াকার?
জাকির আবু জাফর : যিনি ছড়া নিয়ে নিজের মতো খেলতে পারেন এবং ছড়া যার হাতে অনায়াসে ঝলসে ওঠে।

আফসার নিজাম : ছড়া লিখে কি হবে?
জাকির আবু জাফর : ছড়া না লিখে কি হবে? কিছুই হবে না। সুতরাং লেখা উচিৎ। মানোত্তীর্ণ দু’চারটি ছড়াই একজন লেখককে ইতিহাসে জায়গা করে দিতে পারে। অতীত ইতিহাস তাই বলে।

আফসার নিজাম : ছড়াকার তৈরিতে সাহিত্যের আসরে ভূমিকা কতোটুক?
জাকির আবু জাফর : শুধু ছড়াকার কেনো, যে কোনো লেখকই নিজ থেকে গড়ে ওঠে। অর্থাৎ লেখক তৈয়িার করা যায় না। হোক সে ছড়াকার, কবি কিংবা ঔপন্যাসিক। তবে সাহিত্য সভা একজন লেখককে অনেকদূর এগিয়ে দিতে পারে। এক্ষেত্রে সাহিত্য সভার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সুতরাং ছড়াকারের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

আফসার নিজাম : বর্তমান ছড়া দেশপ্রেম উঠে গিয়ে যেয়ে রাজনীেিত মুখর, আপনি কি তাই মনে করেন?
জাকির আবু জাফর : ছড়া মাত্রই রাজনীতি নির্ভর এটা ঠিক নয়। তবে বেশিরভাগ ছড়াই রাজনেতিক ছায়ায় নিঃশ্বাস নিচ্ছে। এ সমস্ত ছড়ায় রাজনৈতিক বিবেচনা এতো বেশি প্রাধান্য থাকে যে, ছড়ার গুণাগুণ ও লোপ পেয়ে যায়। পাশাপাশি আশার দিক হচ্ছে দেশপ্রেম নিয়ে নতুনভাবে ছড়া লেখা হচ্ছে। এসব ছড়া যেমন শক্তিশালী তেমনি আধুনিকও। অতএব সম্ভাবনা উজ্জ্বল।

আফসার নিজাম : প্যারোডি ছড়া, মৌলিক ছড়াসাহিত্যকে ক্ষতি করে বলে কি আপনিমনে করেন?
জাকির আবু জাফর : প্যারোডি ছড়া মৌলিক ছড়াসাহিত্যকে ক্ষতি করে কি না এ প্রশ্নে না গিয়ে আমার মনে হয় প্যারোডি থেকে দূরে থাকাই ভালো। তবে মৌলিক রচনার ক্ষতি কেউ করতে পারে না।

আফসার নিজাম : ছড়াকার ভাবতে আপনার কেমন লাগে?
জাকির আবু জাফর : ছড়াকার ভাবাভাবির বিষয় নয়। এতো এক প্রত্যক্ষ খেলা। এ খেলায় যারাই পারদর্শিতা অর্জন করতে পারবে, লোকেরাই তাকে তার যথাযথ আসনেতুলে ধরবে। তবে নিজেকে ছড়াকার ভাবতে কার না ভালো লাগে?

নিব : বর্ষ-তিন সংখ্যা-সাত এপ্রিল-২০০১


জাকির আবু জাফর এর ছড়া

স্বাধীনতার ঘোড়া

বখতিয়ারের ঘোড়া এলো বখতিয়ারের ঘোড়া
ঢুকলো রাজার সিংহাসনে ভয় করেনি থোড়া
বখতিয়ারের ঘোড়া
স্বাধীনতার ঘোড়া
বখতিয়ারের ঘোড়ার ধ্বনি এখন বিশ্বজোড়া।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.