Header Ads

Header ADS

তিনপুরুষ এবঙ পুত্রপ্রজেন্মর প্রকাশনা উৎসবের অভিভাষণ_আফসার নিজাম


 
তিনপুরুষ এবঙ পুত্রপ্রজেন্মর প্রকাশনা উৎসবের অভিভাষণ

আফসার নিজাম

আজকের অনুষ্ঠানের সম্মানিত অতিথি কবি সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার, কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক মতিউর রহমান, কবি সোলায়মান আহসান, কবি হাসান আলীম, কবি ইসমাঈল হোসেন দিনাজী, ছড়াশিল্পী সাজজাদ হোসাইন খান, কবি আসাদ বিন হাফিজ সহ আমার প্রাণপ্রিয় লেখকবৃন্দ, উপস্থিত শ্রোতা ও পাঠকবৃন্দ আসসালামু আলাইকুম।

একটি বই একজন লেখকের সন্তানতুল্য। আমার মেয়ে হাইফা তাননুর যেমন আমার প্রাণপ্রিয় হৃদয়, ছেলে মিখাইল জাবির যেমন প্রাণভ্রমরা ঠিক তেমনি আমার কবিতার বাই ‘তিনপুরুষ এবঙ পুত্রপ্রজন্ম’ও আমার চোখের মণি। আমি আমার স্ত্রী রেহনুবা’র সাথে পবিত্র সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়ার পর অধির আগ্রহে অপেক্ষা করেছি নতুন প্রজন্মের জন্য ঠিক তেমনি আমার ভেতর কাব্যসত্ত্বার উদয় হওয়ার পর যখন কবিতা সৃজন করেছি তখন থেকে একটি বই প্রকাশের স্বপ্নে মগ্ন থেকেছি। আজ আমার সেই স্বপ্ন পুরন হয়েছে।

কোনো পরিবারে নতুন সন্তান আসলে সন্তানের পিতা মাতা যেমন আনন্দে বিহবল হয় সেই সাথে সন্তানের আত্মীয় স্বজনও খুশিতে মিষ্টিমুখ করে। পান খাওয়া লালঠোঁটে প্রকাশ করে আনন্দবার্তা। তেমনি একজন লেখকের একটি বই প্রকাশ পেলে লেখক যেমন আনন্দে আত্মহারা হয় তেমনি লেখকআত্মীয়রা আত্মহারা হয়। এখানে লেখকের আত্মীয় হলো লেখকের সহযাত্রী কবি, সাহিত্যিক ও পাঠকবৃন্দত।

আজকের অনুষ্ঠান সেই আত্মীয়দের আনন্দ প্রকাশের উৎসব। যদিও এখানে ব্যানারে লেখা আছে তিনপুর এবঙ পুত্রপ্রজন্ম-এর প্রকাশনা উৎসব। এটাকে আমি মূলত আনন্দ উৎসব বলবো। এই একটি সন্তানের মুখকে কেন্দ্র করে আজ আমার সৃজন অভিভাবক, সুহৃদ, বন্ধু, পাঠক উপস্থিত হয়েছেন। তাঁদেরকে আমার পক্ষ থেকে জানাই বিন¤্র শ্রদ্ধা ও অভিভাদন। আজ আমি যারপরনাই খুশি হয়েছি এই ভেবে যে আমি সৃজন সমাজের সবচেয়ে প্রাজ্ঞ মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। তাঁদের সাহাচার্য পেয়েছি।

আজ এই বই প্রকাশের আনন্দ দিনে শ্রদ্ধাচিত্তে স্মরণ করছি বাংলাদেশ সংস্কৃতিকেন্দ্রের স্বপ্নদ্রষ্টা কবি মতিউর রহমান মল্লিককে। তাঁর ঐকান্তিক ভালোবাসায় সিক্ত আমার জীবন। আমার এই আনন্দ দিনে তাঁর অনুপুস্থিতি আমাকে বেদনার সাগরে ভাসিয়ে নিচ্ছে। কেবলি তাঁকে মনে পড়ছে। মনে পড়ছে তাঁর সাথে আমার অভিমান, আবদার, ভালোবাসার স্মৃতি। কতো অভিমান করেছি, কতো অনুযোগ করেছি, কতো অন্যায় আবদারও করেছি। সবকিছু বড়ভাইসুলভ দৃষ্টিতে গ্রহণ করে আমার পথচলাকে সহজ করে তুলেছেন। আমি আবারও তাঁর মাগফিরাত কামনা করছি।

আমি আরো স্মরণ করছি আমার সৃজন অভিভাক আবদুল মান্নান তালিব, ড. কাজী দীন মুহম্মদ, সাহিত্য সমালোচক শাহাবুদ্দিন আহমদ, কবি আবদুল মান্নান সৈয়দ, কবি গোলাম মোহাম্মদ ও আমার সহযাত্রী ছড়াশিল্পী রকিবুল ইসলামকে। যাঁরা আমার সৃজনক্রিয়াকে সচল রাখার জন্য অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।

আজ কবি আল মাহমুদ আসলে খুশি হতেন। তাঁর শারীকি অবস্থার অবনতির জন্য এতোদূর আসতে পারেননি। তাঁর সাথে যতোবার দেখা হয়েছে ততোবারই আমার একটি বই প্রকাশের প্রতি তাগিদ দিয়েছে এবং কি অন্যেরা আমার প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেও আমার বই প্রকাশ হয়েছে কি না তার খোঁজ নিয়েছেন। আমার বই প্রকাশের এই আনন্দেও দিনে তাঁকেও অভিভাদন জানাচ্ছি।

আমি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি বাংলাদেশ সংস্কৃতিকেন্দ্রের উপ-পরিচালক শেখ আবুল কাসেম মিঠুনকে যার চিন্তায় এই অনুষ্ঠটি হচ্ছে। আরো ধন্যবাদ জ্ঞানপন করছি কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক হাসান মুর্তাজা, শিল্পী মালিক আবদুল লতিফ, ওয়াছিকুল আজাদ, শিল্পী মাসুদ রানা, মাহবুবুল আলম, উৎসঙ্গ সৃজন চিন্তনের পরিচালক আহমদ বাসির, সহকারী পরিচালক মাহমুদ বিন হাফিজসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ। বিপরীত উচ্চারণ সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সেক্রেটারি জাহিরুল ইসলামসহ বিপরীত উচ্চারণ পরিবারের সদস্যবৃন্দ। যাঁদের হৃদয় খুলে বিছিয়ে দিয়েছে এই অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন করার জন্য।

কবি হাসান আলীম ও কবি সোলায়মান আহসানকে ধন্যবাদ না জানিয়ে জানাই ভালোবাসা। আজ আমার মনে হচ্ছে ধন্যবাদের চেয়ে ভালোবাসা অধিক শক্তিশালী। ধন্যবাদ মনে হয় ক্ষণস্থায়ী আর ভালোবাসা চিরস্থায়ী। একজন অগ্রজ তাঁর অনুজের প্রতি যে দায়িত্ব তা তাঁরা দুজন পালন করেছেন। বিপরীত উচ্চারণের মাধ্যমে একটি প্রকাশনা উৎসব করেছেন আর অন্যজন সদ্যজাত এই বইটিকে মূল্যায়ন করে একটি নিবন্ধ রচনা করেছেন।

সব শেষে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আত্মপ্রকাশনের অন্যতম কান্ডারী কবি রেদওয়ানুল হককে। যে বন্ধু তার অক্লান্ত পরিশ্রম দিয়ে আমার সন্তান তিনপুরুষ এবঙ পুত্রপ্রজন্মকে আলোর মুখ দেখতে সহায়তা করেছে।

আমার গোছালো কথাগুলো অগোছালো হয়ে গেছে আবেগের কারণে। আবারও সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে আমার কথা সমাপ্ত করছি। আল্লাহ হাফেজ।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.